Magazine - 2020
 Magazine - 2020





❖ প্রত্যাশা ❖
তৃতীয় প্রকাশন (E- Magazine)
---------------------------

পান্ডবেশ্বর নামুপাড়া অধিবাসীবৃন্দ
পান্ডবেশ্বর, পশ্চিম বর্ধমান
প্রকাশ: ৫ই কার্তিক, ১৪২৭ (ইং-22/10/2020)
প্রচ্ছদ সজ্জা: রূপক পাল
লেখনী কমিটি: শিখা ঘোষ অনিমা চ্যাটার্জী ছন্দা পাল মন্ডল ভাস্বতী ঘোষ মধুমিতা পাল
ডিজিটাল রূপায়ন: নিশীথ কুমার ঘোষ

-: সম্পাদকীয় :-
দীপক পাল
---------------------

আজ রবিবার আমাদের দুর্গাপূজার প্রস্তুতি বলতে কিভাবে দূর্গা পূজা সম্পন্ন করা যাবে তার জন্য পূজা কমিটির প্রায় সকলেই একটা ভার্চুয়াল সভা শেষ করে লিখতে বসলাম। আর মাত্র ৫০ দিন বাকি মা দুর্গার মর্তে আগমনের। যাই হোক কোনোক্রমে সভায় প্রায় সব কিছু আলোচনা হল বাজেট, বায়না, কিভাবে সব বাস্তবায়িত করা যাবে তার রূপরেখা। দুর্গাপুজো আরও অন্যান্য পূজার মত শুধুই পূজা-অর্চনা পর্বে শেষ নয়, আপামর বাঙালির কাছে খাওয়া, পরা বাঁচা জীবিকার চরমসীমার আবেগকে বোঝাই - সর্বশ্রেষ্ঠ দুর্গোৎসব। কিন্তু সালটা তো 2020 মানে বিশ-বিশ বর্ণ বিপর্যয়ে বিষ-বিষ। আমরা জানতাম বিষে বিষে বিষক্ষয় আমরা সবাই দেখলাম বিশে বিশে বিষময়, অর্থাৎ 2020 সালের শুরু থেকে বিশ্ব করোনা নামক বিষধর ভাইরাস সংক্রমণে সমগ্র মানবজাতি আক্রান্ত। স্বাভাবিক বাঁচার ছন্দ পাল্টে গিয়ে দূরত্ব বিধি, মুখাবয়ব ঢাকা, হাত শুদ্ধিকরণ জায়গা শুদ্ধিকরণ ও নানা বিধ করোনা বিধি মেনে চলতে হচ্ছে। আবার ইংরেজি 2020 টোয়েন্টি-টোয়েন্টি যার অর্থ বুঝতে বেশি সময় লাগে না, ক্রিকেটের একটা format যা কুড়ি ওভারের + কুড়ি ওভারের খেলা, খুবই উত্তেজনা প্রবণ এবং মনোরঞ্জনপূর্ণ । এটা উল্লেখ করলাম, কারণ বর্তমান বছরের সাথে প্রথম অংশ মিলে যাচ্ছে কিন্তু মনোরঞ্জন পূর্ণ নয়। এই চলমান বর্ষ আমাদের শিখিয়েছে অনেক কিছু- কোয়ারেন্টাইন, লকডাউন ,করোনা (covid-19), online class আর আর হারিয়েছি ভারতের বীর সৈনিকদের, হারিয়েছি চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, ঝাড়ুদার, বিদ্যুৎকর্মী, শিক্ষক, সমাজকল্যাণকারি অসংখ্য সাধারণ মানুষ। এতো কিছু পরেও বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব পালনের উন্মাদনা যেন বিন্দুমাত্র ক্ষীণ না হয় সেই কল্পে চলছে বাংলা। হয়তো শিক্ষা ও আর্থিক অনটন বাজারের কেনা কাটার দিকে রাশ টেনেছে। বেড়েছে online কেনাকাটা। পুজো মানে বাচ্চাদের হুল্লোড় ,আড্ডা, জমজমাট আলোর সাজ, রঙিন জামা কাপড় । সকল প্যান্ডেল কর্মী, শিল্পী, নকশাকার, ঢাকি মৃৎশিল্পী, লাইট ম্যান ,বিভিন্ন ছোট খাটো ব্যবসায়ীদের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ ফিরে পাওয়া, তাতেই বাড়ির বাচ্চাদের নতুন জামা কাপড় আর ছোটদের আনন্দের হাসি পুজোর আনন্দকে মোহিত করে তোলে ,যদিও এবছর অনেকাংশে তা ফিকে লাগছে। মহামান্য মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতায় হয়তো কিছুটা ফিরে পাওয়া যাবে ।এই সব কিছুর পরেও রথযাত্রা, স্বাধীনতা দিবস, বিশ্বকর্মা পুজো পালিত হয়েছে। কিছু কিছু অনুষ্ঠানে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সহযোগিতায় সাধারণের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে। সেই রাস্তায় আমাদের দুর্গাপুজো কমিটির নিশীথ ঘোষের নিরলস প্রচেষ্টায় পাণ্ডবেশ্বর নামুপাড়া অধিবাসীবৃন্দ সূচনা করেছে website ও Android app যার দ্বারা আমাদের ছেলেমেয়েরাও virtual অনুষ্ঠান করতে পারছে। আমাদের দুর্গাপূজার সময় প্রকাশিত হয় পত্রিকা "প্রত্যাশা"। সেই "প্রত্যাশা"কে এবার আমাদের website মাধ্যম দ্বারা online প্রকাশনা করব। গত সংখ্যায় ব্যাপক সাড়া পেয়ে আমরা ধন্য ও আনন্দিত । গ্রামের প্রায় সবার লেখা প্রকাশ করতে চেষ্টা করেছি, সবাইকে সুযোগ করে দিয়ে তাদের সুপ্ত প্রতিভা কে মেলে ধরার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা করে চলেছি । এবছর বিজ্ঞাপন ছাড়াই আমাদের "প্রত্যাশা"র কলেবর প্রকাশিত হচ্ছে। সাহিত্য অনুরাগীদের লেখা মর্যাদার সাথে ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম দ্বারা প্রকাশ হতে চলেছে। সর্বশেষে সকল পাঠক-পাঠিকা কে জানাই শুভ শারদীয়া দুর্গাপূজার প্রীতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন, দেবীর কাছে প্রার্থনা করি সকল বিশ্ববাসী করোনা মুক্ত হোক, সকলেই সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করুক।


-: সচেতন :-
বৈশাখী চ্যাটার্জ্জী
------------------

বলি শুনছিস, টেপির মা?
     হ গো বল টেপির বাপট।।
আজ আমি শুনলুম,
     ঐ পাড়ার মুড়টতে,
একট নতুন রূগ এসেছে।।
     হ গো আমি ও শুনেছি বটে।
পুলিশের ঐ লুকগুলা,
     মাইকে করে বলতে এসেছিল।।
রূগটার নামটা বলছিল "করুনা"।।
     তাই হ গো আর ও বলছিল,
নাক-মুখটাতে কাপড়ট চাপা দিতে,
     সবার থেকে দূরে-দূরে কথা বলতে,
হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখট ঢাকতে,
এক জায়গায় ভিড় না করতে বারনট করছিল।।
     শুন কাল থ্যাকে তুমি আর,
ঐ তাসট খেলতে য্যাওনা।
     পুলিশের ঐ লুকগুলা বলছিল,
এক জায়গায় পাঁচ - সাত জনের
     বেশি লুক থাকলে,
আইনের কী ব্যবস্থা লিবেক।।
     আর কাল থ্যাকে ,
তুমি ঐ কাজটতে যখন যাবেক?
     তুমার ঐ গামছাট মুখটতে,
চাপাট দিয়ে কাজট করবে,
     কারূর বেশি সামনেটতে
দ্যাড়ায়ে গল্পট করনা,
আর ঐ

-: ফৌজির প্রিয়তম :-
লক্ষী চ্যাটার্জ্জী
------------------------

ফিরে এসো প্রিয়
     তোমারে জড়াতে চায় দুটি বহুলতা
   হৃদয় কাঁদিয়া বলে
যেয়োনা যেয়োনা।
কেমনে প্রকাশে ব্যাকুল বাসনা,
    নীরব কাশি খনি বেজেছে আবার
প্রিয়ার বারতা বুঝি এসেছে আমার ।
আমি ধরা দিয়েছি গো,
     তোমার আকাশের পাখি...
তোমার হৃদয়ে উড়িতে চাই একাকী।
    তোমার নয়ন পানে চেয়ে পড়ে মোর মনে
         শতকোটি হারানো সুখ আছে ও নয়নে।
অনন্ত কালের মোর
সূখ, দুঃখ শোক
সকলি রহিছে পরে তোমারি মাঝারে।
      আজ কোন কাজ নয়,
সব কাজ ফেলে দিয়ে
   ফিরে এসো প্রিয়ে
শুধু একবার কাছে এসো মিটাতে মনের আশা।
যতক্ষণ অন্তরে শিরা উপশিরা, ভরি নাই উঠে।
       যতক্ষণ মনের আনন্দ নাহি যায় টুটে।
ভুলে যায় কি আশা মেটেনি আমার প্রানে প্রিয়
      সকাল থেকে প্রতিটি ক্ষনে........
      মিশে আছে আমার প্রানে........
    ওগো প্রিয়তম।
কতো দিন প্রিয়া বলে ডাকোনি আমায়.....
      কানে কানে অতি সাবধানে বলোনি
অর্থহীন হৃদয়ের ভাষা।
শক্ত মুঠিতে জড়িয়ে ধরোনি আমার বাহু...
কর্কষ গাল বুলায়ে দাওনি আমার গালে।
রাত জাগি শুধু চোখের জলে।
      বুঝেছি আমার রাতের স্বপন হয়েছে ভোর।
নেই আর সেই চুপি ,চুপি চাওয়া......
     রান্না ঘরেতে এসে
      ফিরে ফিরে যাওয়া। 
  আপনারে আর চাহিনা লুকাতে, আপন মাঝে।
উথলি উঠে গো সারা দেহ মন....
        খুঁজি বাড়ী ময়,এ নয়নে তোমারে।
প্রিয়তম মোর ফিরে এসো ওগো..
        তোমার প্রিয়ার ঘরেতে।। 

-: মনের মাঝে তুমি :-
বৈশাখী খাণ্ডাইত
----------------------------

মনের মাঝে তুমি মা গো
সবাই তা জানি।
চোখ খুললেই তোমায় পাবো
তাই তো সবাই মানি।।
তুমি আছো গোলক ধামে
বিশ্ব চরাচরে।
সর্বত্র বিরাজ করো
তিন ভুবনের পাড়ে।।
তুমি মোদের পথ দেখাও মা
আশা জাগাও মনে।
সব কিছু তাই ভুলে গিয়ে
তোমায় রাখি প্রাণে।।
ডাকলে তোমায় পাই যেন মা
এই ভরসা করি।
সকল কাজে জিততে পারি
কিছুতে না ডরি।।
হিংসা বিবাদ ঝগড়া থেকে
বিরত রাখো আমায়।
সহস্র কোটি প্রনাম মাগো
জানাই আমি তোমায়।। 

-: আমার LOCKDOWN :-
আবির রক্ষিত
চতুর্থ শ্রেণী

----------------------------

     বাড়ি-বাড়ি-বাড়ি
     কতদিন যে চড়িনা গাড়ি -
     আর কি আমি থাকতে পারি?
     নাইরে আমার স্কুল , যা করি, 
     মায়ের কাছে সবই যে ভুল,
     ফুচকা পাইনা, MIO-AMORE-ও যাইনা
     CHIPS - ICE-CREAM কতদিন খাইনা,
     আবার কবে যে ফিরবে রে সব
     আমায় যে তা কেউ কয়না। 


-: কোরনা ভাইরাস :-
মানুষই মানুষের শত্রু
অনন্যা রক্ষিত

----------------------------

একবার একজন ভদ্রমহিলার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে তিনি বলেন ,তাঁর একজন আত্মীয়ের বাড়ি যাবেন। কিন্তু তাঁর মুখে আশঙ্কাগ্রস্ত এবং হতাশার প্রতিচ্ছবি দেখে আমি তাঁকে বলি ,কি হয়েছে আপনার? আমার কথার প্রশ্চাতে তিনি বলেন যে ,বোন জানোই তো,এখন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ চলছে সারা বিশ্ব জুড়ে, তাই আমি ভেবে পাচ্ছি না যে,আমার এই সময় কোনো আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়া ঠিক কি না? তখন আমি বললাম ,ও, আচ্ছা এই ব্যাপার ! তখন সেই ভদ্রমহিলা আবার বললেন -আচ্ছা বোন ,তুমি কি আমায় বলতে পারো যে,এই ভাইরাসের নাম করোনা কেন?অর্থাৎ করুন ভাইরাস কেন নয়? তখন আমি বলি আচ্ছা আপনি কি জানেন যে,এই ভাইরাসের মতো এককালে আরো একটা রোগ ছিল প্লেগ। আর এই রোগটি ছিল একমাত্র ইঁদুর বাহিত রোগ। তিনি বলে ওঠেন হ্যাঁ জানি তো! আমি বলি,যখন জানেন তখন এই টাও নিশ্চয় জানেন যে,সেই সময় প্লেগ রোগটি ১০ দিনের মধ্যে রোগাক্রান্ত মানুষদের শরীরে ফুটে উঠত, যেমন বর্তমানে এই করোনা রোগটি ১৪ দিনের মধ্যে ফুটে উঠেছে, ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের শরীরে। ভদ্রমহিলা বলেন, হ্যাঁ জানি,কিন্তু বোন তুমি এত বললে না যে,'করোনা' এবং 'করুণা' এই দুটি শব্দের মধ্যে তফাতটা কোথায়?অর্থাৎ যার জন্য এই ভাইরাসের নাম 'করোনা ভাইরাস', 'করুনা ভাইরাস' নয়। আমি বলি,আচ্ছা তবে বলি শুনুন, "সবাই জানে ঈশ্বর করুনাময়, তিনি যা করেন তা ভালোর জন্যই করেন,“ আবার অনেক জ্ঞানি পন্ডিতেরা বলেন যে, "কর্ম করে যাও,ফলের আশা করোনা।“ এইবার বলুন আপনি কি বুঝলেন? তিনি বলেন যে,অনেক কিছুই তো বুঝলাম !কিন্তু বোন এইটা বুঝলাম না যে, তুমি করোনা ভাইরাসের সঙ্গে ঈশ্বরকে কেন তুলনা করছো? তাঁর কথা শোনার পর আমি বললাম যে, আপনার এই প্রশ্নের উত্তর আমি দেব।কিন্তু তার আগে আপনি বলুন তো যে,এক আত্মীয়ের বাড়ি যাবার নাম করে আপনি করোনা ভাইরাসকে নিয়ে এত কেন টানাটানি করছেন? আমার এই কথাগুলি শোনার পর ভদ্রমহিলা কোনো উত্তর না দিয়েই,সরাসরি আমাকে আবার প্রশ্ন করলেন। যেটি হল, বোন, তুমি যে এত ঈশ্বর ঈশ্বর করে লাফাচ্ছ,তবে তুমি কি কখনো ঈশ্বরকে নিজের চোখে দেখেছ? আমি বলি যে,আচ্ছা আপনি বলুন তো!আপনি যে এত করোনা ভাইরাস,করোনা ভাইরাস করছেন, তবে আপনি কি কখনো অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এই ভাইরাসটিকে স্বচক্ষে কি কখনো দেখেছেন?


-: বাবা :-
রাত্রি চ্যাটার্জী
--------------

হতে পারে সে আমায় চাঁদ এনে দেয় নি, কিন্তু আমার মুখে সর্বক্ষণ হাসি ফুটিয়ে রেখেছে।। হতে পারে সে আমায় সোনায় মোরে রাখেনি, তুলোয় মুরেছে বোধ হয়।। আরে! সোনা যে ধাতু তাতে যে আমার নরম চামড়ায় আঘাত পৌঁছবে।। হতে পারে সে আমায় মাসিক হাত খরচা দেয় না, তার কাছে তা হলো গিয়ে বড়লোকি কাইদা, তবে আমার বিলাসিতায় পান থেকে চুন টিও খসে নাহ্।। হতে পারে সে আমায় ফ্রেন্ডস পার্টি তে যেতে দিতে মন মানে না, তবে আজও আমার ফোন এর খোঁজ রাখে না।। সে আমায় ‘বেটা’ বলে ডাক দেয় ! কিন্তু আমি যে মেয়ে.... সে যদি রাজা হয়, আমি তার রাজকন্যে।।


- : মহাত্মা গান্ধী :-
উত্তম খান্ডাইত
----------------------

ঈশ্বরের প্রেরিত দূত
জনম যাহার ১৮৬৯ এর ২রা অক্টোবর
মায়ের কোল আলো করে
ধন্য হল গুজরাতের পোরবন্দর।

ব্রিটিশ মুক্ত ভারত
ছিল যাঁর জীবনের পণ
দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল
ভোগ করছে কোটি কোটি জনগণ ।

সত্যাগ্রহ ও অসহযোগ আন্দোলন
যাহা ছিল দেশমাতার শৃঙ্খল মোচনের স্তম্ভ
নিজ চরকায় তৈরি ধূতি ও শাল
চূর্ণ করেছিল ব্রিটিশ শাসকের দম্ভ।

ব্রিটিশ ত্যাগের শেষ অস্ত্র
ভারত ছাড়ো আন্দোলন
মাতৃ শৃঙ্খল মোচন করতে
যাঁর হয়েছিল কারাবরণ।

লবন আইন ভঙ্গ ও ডান্ডি অভিযান
আরও  আছে অনেক অবদান
জাতির জনকের পরিচয়
যাঁকে দিয়েছে বিশ্ব শ্রেষ্ঠ সম্মান ।

দিনে দিনে আবিষ্কৃত বিজ্ঞান
ভারতকে করেছে সফল
তবুও গান্ধীজির ছবি ছাড়া
ভারতীয় মুদ্রা অচল। 

-: পরিযায়ী শ্রমিক :-
শুভেন্দু চ্যাটার্জী
----------------------

আমরা পরিযায়ী শ্রমিক
দিল্লির দাদা দিদিরা তাকিয়ে দেখছে,
কলকাতার দাদা দিদিরা তাকিয়ে দেখছে,
আমরা রোদ্দুরকে মানিনা
মানিনা ঝড় বৃষ্টিকে
তারা সবাই জানে
তাইতো আমরা পথে হাঁটলে
তাদের চোখে পড়েনা,
আমাদের শিশুরা খিদের জ্বালাই
কাঁদতে কাঁদতে পথে ঘুমিয়ে পড়লেও
তাদের চোখে পড়েনা।
শুধু তাদের কথাই মনে থাকে
যারা রাতে এ.সি-র হাওয়ায় ঘুমিয়ে পড়ে।
তারা জানে আমরা মাথায় বোঝা নিয়ে চলতে পারি।
খালি পায়ে হাঁটতে পারি।
একসময় আমাদের কথা তাদের খুব মনে পড়ে
তখন দুই হাত জোড় করে বলেন--
"আমরা খেটে খাওয়া মানুষের পাশে আছি
যারা জলে ভিজে, রোদে পুড়ে আমাদের বাসস্থান তৈরি করে,
আমরা তাদের পাশে আছি।"
সেই দিনটা পাঁচ বছর পর একবার আসে।
তখন সেই দাদা দিদির আমাদের মতো পরিযায়ী
শ্রমিকদের প্রতি কত আকুলতা,কত ব্যাকুলতা,
সত্যি মনটা ভরে গেল
দাদা দিদির আপ্যায়ণে।
এরই নাম ভারত আর
আমরা পরিযায়ী শ্রমিক।। 

-: চিরস্থায়ী :-
সুরঞ্জিত ঘোষ
--------------------

সময় যায় না চলে
সময় এগিয়ে যায়

সময় এগিয়ে যায়
পাহাড়ী নদীর মতো
কখনো পরিযায়ী পাখির মতো,
কখনো বুনো হাতির মতো ।

সময় এগিয়ে আসে
কালবৈশাখী রূপে
লু-এর উত্তাপে, আঁধি আড়ালে,
কখনো বা বুকফাটানো রোদের শেষে
এক পশলা বৃষ্টি

সময় যায় না চলে
সময় ছিল, আছে, থাকবেও
চলে যায় মানুষ
যেমন তুমি , আমি
সময়ের হাত ধরে কে চিরকাল হাঁটতে পারে
কেউ না, কেউ না, কেউ না

বন্ধু এসো , সময়ের হাতে দিয়ে যাও কিছু
চিরস্থায়ী কিছু, চিরস্থায়ী... 

-: খোলা চিঠি :-
শুভব্রত চ্যাটার্জী
----------------------

অপেক্ষার ইতি বলে অপেক্ষাতে থাক, কবির ভাষায় কবি বলতেন মাঝেমধ্যে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াতে তাহলে নাকি মন আকাশের মত বিস্তৃতি লাভ করে। জানিনা আমার মন কতটা বিস্তৃতি লাভ করেছে কিন্তু এটা জানি আকাশ আমায় শিখিয়ে অনেক কিছু। মাঝেমধ্যে একান্তে মন খারাপ ভরা মন নিয়ে ছাদে গিয়ে দাঁড়ায় যখন, তখন ওই অন্ধকার আকাশের তারা গুলো অনেক কিছু আমায় শিখিয়ে দেয় তাদের মধ্যে কিছু নাম যুক্ত তারা কিছু নাম না জানা তারা। যেমন সপ্তর্ষিমণ্ডল তার কথায় জীবনটাই জিজ্ঞাসা চিহ্ন, ধ্রুবতারা সে তো নিজের উচ্ছলতায় একান্তে প্রকাশ করে সেই বাস্তবিকভাবে বোঝাই একান্তে থেকেও উজ্জ্বল থাকা যায়, সত্যি তুম যদি শক্ত হতে চাও তাহলে তুমি একান্ত টাকে উপভোগ করতে শেখো। কালপুরুষ সে তো এক জটিল সমীকরণ তাকে বোঝা আমার মতো সাধারণ মানুষের সাধ্য নয়। সে আদৌ বাস্তবিক কিনা জানা নেই। আর আছে শুকতারা, সে সুখের তারা সুখের সময় আসে, আবার বিলীন হয়ে যায়। আবার নাম না জানা তারারা তাদের কদর না থাকলেও তাদের ছাড়া এই আকাশ পরিপূর্ণতা পাইনা। কিন্তু এই জানা-অজানা তাদের মধ্যে এক গভীর সু-সম্পর্ক আছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে কালো মেঘ এসে তাদের মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি করে, ঠিক তখনই সৃষ্টি হয় অহংকার, অভিমান, হিংসা ও দূরত্ব। সময় নষ্ট হবে অনেকটাই কারণ সময় থেমে থাকে না। হয়তো জ্যোৎস্নার আলোয় একদিন সব কালো মেঘ কেটে যাবে। চোখ দুটো যখন আকাশ থেকে সরিয়ে নিজের সমাজের দিকে তাকায়, মনে হয় যেন তারা রায় বলে দিলো তাদের কথা।।


-: অনুভূতি :-
মানস গড়াই
------------------

মা দুর্গার ছেলে গণেশ পুজোর ঢাকের শব্দে মনের আনন্দে জানায় দেয় এই ধরাধামে। দিন গোনার পালা শুরু হলো, কবে মা দুর্গা মন্ডপে যাব এবং প্রতিমা দর্শন করব। দুর্গাপূজার আনন্দে মিশে যায় আমাদের মন। ফুটে ওঠে মনের মধ্যে চাওয়া পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। একটা আনন্দ বাসা বাঁধে মনের মধ্যে কিন্তু এই বছর করোনা ভাইরাস-এই আনন্দকে কিছুটা নিরানন্দে পরিণত করেছে। গোটা পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যু মিছিল আমার আনন্দকে কেড়ে নিয়েছে। তাই মা দুর্গা কে ডাকছি তুমি দশ হাতে অস্ত্র নিয়ে এই করোনা ভাইরাস কে ধ্বংস করো। এই রোগ থেকে চিরতরে মানুষকে বাঁচিয়ে নাও। তোমার আশীর্বাদ স্বরূপ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হোক অতি শীঘ্রই, এই কামনা করি মা তোর কাছে। মহালয়া জানান দেয় মাতৃপক্ষের শুরু হলো এই বুঝি, ওই দিন ধরে চন্ডীপাঠ শুনতে কিনা ভালো লাগে। -- ভোরের পাখির কুজন, চারিদিকে সাদা মেঘ, শিশির ভেজা ঘাস আর কানে ভেসে আসে সেই সুর "জাগো মা দূর্গা" এই বুঝি মহালায়া শুরু হলো। চারিদিকে বাজি ফাটানো শব্দ, দক্ষিণা বাতাস জানান দেয় মা দুর্গার শুভ আরম্ভের কথা। ভারতীয় সংস্কৃতিতে দুর্গাপূজা মানুষের মনকে ছুঁয়ে যায়। পঞ্চমী থেকে দশমী এই কটা দিন নতুন পোশাক পড়ে মা দুর্গার দর্শন করতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করা, নাড়ু মিঠাই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখা এভাবে দিনগুলি নিমেষে পার হয়ে যায়। অবশেষে উপস্থিত হয় মা দুর্গাকে বিদায় জানানোর পালা। এই দিন মাকে বাড়ির বউরা মিষ্টিমুখ করে সিঁদুর দিয়ে পান এবং চোখের জল দিয়ে বিদায় জানায়। প্রতিমা নিরঞ্জনের (বিসর্জন) পর ছোটরা বড়দের পা ছুঁয়ে প্রণাম জানাই এবং আশীর্বাদ নাই। আমাদের নামুপাড়া অধিবাসীবৃন্দ দুর্গাপূজা প্রতিবছর নতুন থিমে উপস্থাপনা করে থাকি। আমাদের ছেলেরা একসাথে দলবদ্ধ হয়ে মিলিতভাবে নিজেরা মণ্ডপ তৈরি করে। রাজীব প্রতিবছরের মতো এবছরও লেখার ব্যাপারে তারা দিতে থাকে। মানস দা তোমার লেখাটা দাও তাই তার কথা শুনে পেন এবং কাগজের পাতা নিয়ে আমার নিজের অনুভূতির কথা লিখে ফেললাম। প্রত্যাশার প্রয়াসকে আমি ধন্যবাদ জানাই। অবশেষে আমি মা দুর্গা কাছে প্রার্থনা করি মা তুমি সকলের বিভেদ দ্বন্দ্বকে মুছে দিয়ে সুখ ও শান্তিতে ভরিয়ে দাও এখানে ইতি টানলাম ।।


-: করোনাভাইরাস :-
কোয়েল ভট্টাচার্য
----------------------

চীন নিয়ে এলো দুঃখ ভাই
নোবেল করোনাভাইরাস
চীন দেশে ঘুরতে যেও না ভারতবাসী
চীন নিয়ে এল করোনা
আসুক যত ঝড় আসুক যত বিপদ
আমরা রহিবো ঘরে বাইরে থাকবে করোনা
ভিতরে করোনা কিছুতে ঢুকবে না
আমরা এই করোনা রুখবই
আমরা সবাই এক হই
নতুন সমাজ গড়ে তুলি
করোনামুক্ত হবেই হবে
সব বাঁধা নিয়ম মানলে
আর সচেতন থাকতে হবে
আমরা ঘরের দরজা দিলাম
ডুবতে দেব না করোনা
আমরা ভয় করব না! ভয় করব না! 

-: আমার ভুবন :-
সঞ্চিতা পাল
----------------------

গ্রামের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ দেবেশবাবু। গ্রামের প্রত্যেকে তাকে খুব শ্রদ্ধা করতেন।দেবেশবাবুর দুই ছেলে,বড়ো ছেলে দেবাদিত্য, সে পড়াশুনায় বেশ ভালো। তাই দেবেশবাবু দেবাদিত্যকে নিয়ে গর্ব অনুভব করতেন। আর ছোট ছেলে শৈবাল, যাকে নিয়ে দেবেশবাবু খুব দুশ্চিন্তা করতেন। শৈবালের লেখাপড়ায় খুব একটা মনোযোগ ছিল না বললেই চলে, তার বেশিরভাগ সময়টাই সে গ্রামের মাঠে-ঘাটেই কাটিয়ে দিত। গ্রামের এই মাঠ-ঘাট, গাছ-পালা, আকাশ-বাতাস সবকিছুই শৈবালের আত্মার সাথে বহুদিনের সম্পর্ক তার। শৈবাল এই মাঠ-ঘাট, গাছপালায় ভরা এই সুন্দর প্রকৃতিকে নানান ছন্দে কবিতার মাধ্যমে তার একখানি ডায়রিতে তুলে ধরত। অন্যদিকে দেবাদিত্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর,জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষাতেও ভালো Rank করাই দেবেশবাবু আনন্দে আত্মাহারা হয়ে পড়ে এবং তিনি মনে মনে স্থির করেন, যে কোন ভাবেই হোক দেবাদিত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতেই হবে। দেবাদিত্যকে Engineering পড়ানোর জন্য দেবেশবাবু তার যতটুকু সম্বল জমি ছিল তাও তিনি বিক্রি করে দিলেন। ধীরে ধীরে সংসারের চাপ বাড়তে থাকে। দেবেশবাবু দিনে দিনে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, এই সংসারের খরচ তিনি কিভাবে চালাবেন তা কিছুই তিনি বুঝতে পারছিলেন না।বাবার এই হতাশা দেখে শৈবাল একটি ছোট কোম্পানীতে যোগ দেয়।সেই কোম্পানীর এক সহকর্মী শৈবালের খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠে। সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর রাত্রে ঘুমানোর সময় শৈবালের মনের পড়ত গ্রামের সেই মেঠো রাস্তার কথা। গাছে পাখিদের কলতানের কথা, আকাশে ভাসমান মেঘের কথা, বাতাসে মিষ্টি মেঠো গন্ধের কথা- এই সব থেকে এমন যেন সে কেমন বিচ্ছিন্ন হওয়ার যাচ্ছে। শৈবাল তার এই কষ্টের কথা কাওকেই বুঝতে দিতে চাই না। কিছুদিন পর, শৈবাল যে কোম্পানীতে কাজ করত সেই কোম্পানীতে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে কোম্পানীর সমস্ত কর্মচারীদের অংশগ্রহণ করার জন্য জানানো হয়। শৈবাল ও তাতে অংশ নেয় এবং তার লেখা এক কবিতা পাঠ করে শোনায়, সেই কবিতা শুনে কোম্পানীর বাকি কর্মচারীরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে এবং হাততালিতে চারপাশ ভরে উঠে। শৈবালের সেই প্ৰিয় বন্ধুটি তার লেখা কবিতার ডায়েরিখানিতে দেখতে চায়। এই কথা শুনে শৈবাল খুশিমনে ডায়েরিটি তাকে দিয়ে দেয়। এইভাবেই কাটতে থাকে শৈবালের জীবন প্রতিদিনের মতো শৈবাল সেই দিনও কাজে যায় কিন্তু সেই দিনের ঘটনাটি ছিল অন্যরকম। সেই দিন শৈবাল কাজ করতে করতে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই দেখে তার সহকর্মচারীরা সকলে মিলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। শৈবালের এই অবস্থার কথা তারা দেবেশবাবুকে ও জানায়, তা শোনামাত্রই দেবেশবাবু হাসপাতালে ছুটে যায় এবং ডাক্তারবাবুর কাছে জানতে চান শৈবালের অসুস্থ অবস্থার কথা। ডাক্তারবাবু তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দিন দুয়েক সময় নেন। এদিকে শৈবালের অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে চলে যায়।ঠিক দুই দিন পর, শৈবালের রিপোর্ট দেখে ডাক্তারবাবু জানান তার শরীরে এমন এক দুরারোগ্য বাধ্যি বাসা বেঁধেছে যে, তাকে কোনভাবেই বাঁচানো সম্ভব নয়। এই কথা শুনে দেবেশবাবু কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিছুদিন হাসপাতালে থাকার পর শৈবালের মৃত্যু হয়। বেশ কিছুদিন পর দেবেশবাবু ঠিকানায় একটি পার্সেল আসে এবং তার সঙ্গে একটি চিঠিও। চিঠিটি ছিল প্রকাশকের লেখা শৈবালকে তাতে লেখা ছিল- শ্রীমান শৈবাল, পত্রের প্রথমেই তোমায় অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানায়। তোমার বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া তোমার লেখা এই কবিতার ডায়েরিটি যেটি পড়ে আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়লাম। তোমার এই অমূল্য ডায়েরিখানি যেটা ছিল নানান রঙের কবিতায় ভরা। তোমার অনুমতি না নিয়েই সেই কবিতার ডায়েরিটি বই-এর আকারে প্রকাশ করলাম। আর, সেই বই-এর প্রথম কপি তোমায় পাঠালাম।

            ইতি -
            প্রকাশক বিকাশ রায়
            কিশলয় প্রকাশনী

দেবেশবাবু চিঠিটি পড়ামাত্র মাটিতে বসে পড়লেন এবং তার চোখ দিয়ে অশ্রুধারা নেমে এল। তিনি বই-এর প্রথম পৃষ্ঠা খুলতেই দেখেন বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা।

"আমার ভুবন
শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়"।


-: Life is precious :-
Anima Chatterje
--------------------------

Life is not a bed of rose. It is full of thorns. We must take pain to remove the thorns in our way. We must surmount difficulties and obstacles.Then and then only we can reach the goal of life. We may fall in problems but we should not say problem is a chance to do our best, it is a challenge. We should keep faith in ourself. Now a days we frequently Heard the news of suicide in our young generation. Whenever I heard these news it hurts me a lot. Only one question arise in my mind that “Why?” Many people who have attempted suicide said that (in suicide note) they wanted to live. They really didn’t want to die.They desire to remain with their loved ones strongly.They simply didn’t see any other options, but I would like to say that a suicide may end an individual’s internal pain, the friends and family who loved the person will continue to suffer as a result of their loss. They are left to struggle with their grief. The Clark says:-“ The person who completes suicide, dies ones. Those left behind die a thousand deaths, trying to relive those terrible moments and understand………why?” So I should conclude by saying that “ Life is easy when it flowing like a song, but worth while are men who smile when everything goes dead wrong.”


-: Memories :-
Rashi Chatterjee
----------------------

From “I don’t want to go” to “miss those memories”
We all grew up,
From “hating the teacher’s lecture” to “wishing a get together with them” we all grew up,
From “the thoughts of careless future” to “becoming focus on our goals” yes we all grew up,
From “waiting for the final bell to ring” to “want to hear it’s sound again” ofcourse we all grew up,
From “snatching each other tiffins” to “asking for a permission to have it” symbolise we all grew up,
From “never ending talks, without any reason fighting,
interfering in each others matter, laugh our heart out”
to “focused and minding our own business”
yesyes we all grew up,
From “having a bunch of friends” to “in search of a true

friend” is nothing but we all grew up,
Yes, we all grew up and now we have nothing like that, except the school
memories which are now just a golden past.


-: সৃষ্টি :-
আশালতা মন্ডল
----------------

সৃজনশীল, যা নেই তা নির্মাণ, নতুনের আগমন
স্রষ্টার মনের তরঙ্গায়িত হিল্লোলের উন্মোচন;
উন্মোচিত বস্তু প্রশংসা লোলুপতাহীন। তথাপি 
বিশ্ববাসীকে দেয় অনুপ্রেরণা, স্রষ্টা পাই সম্মান, 
অমরত্ব, জীবিকার পন্থা জগত জনের অন্তরে সিংহাসন।

আদিম থেকে বর্তমান ঝর্ণাধারায়, বিপুল সম্ভারে 
প্রবহমান অভাবের তাড়নায় যুগোপযোগীতার 
প্রাপ্তিতে বহুল আকর্ষণীয়। দৃষ্টান্ত দেখি দেশের 
কৃষি ব্যবস্থায় আদিম মানুষের পশুপালনের পন্থায়;
খাদ্য ঘাস খোজার কৃচ্ছ-সাধনায়।

প্রথম প্রাতে আসে হাস্যজ্জল উচ্ছ্বাস,
অপরাহ্ণে জোটে নানা মহলের জল্পনা-কল্পনার করাল গ্রাস;
সে গ্রাস স্রষ্টার অন্তরে ধ্বংস করে আনন্দোচ্ছাস
তবুও মনে গনি, সুযোগে তুমি ভবিষ্যতের আলোর উৎস।

বহুরূপী মত তুমি মুখোশধারী কখনো প্রাণ দাতা,
কখনো বিনাশকারীপড়ন্তু নিজে নির্বিকারী 
প্রশংসা-কুৎসা দাতা তোমা, ব্যবহারকারী ।। 

-: নিরাশা :-
গৌরব ভান্ডারী
------------------

মনে পরে যাচ্ছে আগের বছরের সেই দুর্গা পূজার সুন্দর 
দিনগুলির কথা। কত আনন্দ কত মজা করে কাটিয়ে 
ছিলাম। সপ্তমীর দিন সব বন্ধুরা মিলে নদীতে বারি 
আনা থেকে শুরু করে দশমীর দিন বারি বিসর্জন পর্যন্ত 
সেই সময় গুলো যেন আজ ও আমায় আনন্দ দেয়।
ভেবেছিলাম এই বছর (2020) একই ভাবে কাটবে 
আমাদের পুজো। কিন্তু না, সব আশায় নিরাশা হয়ে গেল।
করোনা নামক মহামারী সারা বিশ্বকে ভাসিয়ে নিয়ে 
গেল। শুরু হলো দেশে "lockdown" একে অপরের সাথে 
মেলামেশা বন্ধ, বাড়ি থেকে বেড়ানো বন্ধ, কী ভাবে হবে 
আমাদের দুর্গা পূজা? গত বছরের মতো আনন্দ কি পাব না? 
এই সব নিরাশাই এখন আমার দিন কাটছে।আমি ভগবানের 
কাছে প্রত্যেক দিন প্রার্থনা করি যেন এই মহামারী পুজোর 
আগেই দূর হয়ে যায়। 


-: ব্যথা :-
পূজা ভান্ডারী
---------------

জন্ম নিলাম পৃথিবীতে
তবুও বঞ্চিত হলাম
মায়ের ভালোবাসা থেকে।

অনেক বছর কেটে গেল,
"প্রত্যাশা" এসে কিছু লেখার
সুযোগ করে দিল।

মায়ের কথা বলবো কাকে
চোখের জলে বুক যে ভাসে।

কবিতায় তাই লিখছি আমি
মা হারানোর ব্যথা খানি।

আবার ভাবি, লিখবো আমি যা
বুঝবে কি সবাই তা?

বুঝবে তারা,
যারা মাতৃহারা। 


-: দুর্গতিনাশিনী :-
অরুপ পাল
-----------------------

'বাজলো তোমার আলোর বেণু' রেডিও থেকে ভেসে আসছে। আকাশে এখনো অন্ধকার। নাট মন্দিরে দুর্গা প্রতিমার আজ চক্ষুদান। পুরানো জমিদার বাড়ির কচিকাচারা খুব উৎসাহের তাদের ঠাকুমার কাছে মহালায়া শুনছে। কাত্যায়নী দেবীর দুই ছেলে - সুরেন আর বিমান। সুরেন থাকে কলকাতায় সঙ্গে তার স্ত্রী নয় বছরের ছেলে সন্তু আর আট বছরের মেয়ে অপর্ণা। বাড়ির পুজোতে বেশ কয়েকদিন আগে থাকতেই চলে আসে। সুরেন একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে। বিমান করে তাদের গ্রামের দেবীপুরের এর পোস্ট অফিসে। সস্ত্রীক মায়ের কাছেই থাকে। এক ছেলে যতীন। বয়স তার সাত। দেবীপুর এর মুখার্জি পরিবারের এই পুজো অনেক পুরনো। অনেককাল আগে এই পুজা তাদেরই পূর্বপুরুষ জমিদার শুরু করে গেছেন। তবে এখন আর সে আড়ম্বর নেই। বংশীধর মুখার্জির মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে এই পরম্পরা চালিয়ে যাচ্ছে। কোনমতে টিকিয়ে রেখেছে, বংশমর্যাদা। বিশাল বাড়িটা দেখলে বোঝা যায় অতীতের মহল এখন জীর্ণপ্রায়। বাড়ির পাশে বড় নাট মন্দির আর প্রতিমা মন্দির। তার পিছন দিকে জায়গায় বাগান। কিছু ফুল গাছ কিছু লেবু গাছ আর একধার বেশ কতো ক্যাকটাস গাছ লাগানো আর ছোট ছোট পাথর। কখনো কখনো ফিল্ম কোম্পানি বাড়িটার একটা অংশও ভাড়া নিয়ে হপ্তখানেক শুটিং করে যায়। পিলার দেওয়ার লম্বা সারি একটা জায়গা ব্যালকনি। কথাটা বলব বলব করেও সুরেন বলতে পারেনি। সন্ধ্যাবেলা, মায়ের কাছে এসে আস্তে আস্তে বলতে লাগল- 'তোমাকে একটা কথা বলার ছিল মা। কয়েক দিন থেকে ভাবছি।' কাত্যায়নী দেবী ধুপটা ধরিয়ে দিয়ে বংশীধরের এর ছবি আর ঠাকুরের মূর্তির প্রতি দেখানো হয়ে গেলে বলেন - 'হ্যাঁ বল্। কি বলবি।' সুরেন- 'এই বছরই হয়তো আমাদের শেষ পুজো হবে। এরপর পুজো করার ক্ষমতা থাকবে কিনা জানিনা। আমার চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি।' বিস্মিত মায়ের প্রশ্ন - 'ছেড়ে দিয়েছিস? কেন চাকরি ছাড়লি কেন? কিছু হয়েছে?' সুরেন- 'একটা খুব বড় প্রকল্প হাতে পাওয়ার জন্য আমাদের কোম্পানি একটা রাজনৈতিক বড় নেতা কে মোটা টাকা দেয়। সেটা করার জন্য আমাকে তাঁদের দল বলের খাতির করার আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি মন থেকে মেনে নিতে পারছিলাম না। তাই-' বলে থেমে যায়। মা- 'এটা কত দিন আগে হয়েছে?' সুরেন- ' প্রায় এক মাস আগে' মা- 'এখন কি করবি?' সুরেন- 'বুঝে উঠতে পারছি না। তবে আবার নতুন করে খোঁজা শুরু করতে হবে বলে মনে হচ্ছে। জমিদারি যা সম্ভল ছিল বাবার সময়ে ফ্যাক্টরিতে গেছে। সে ব্যবসাটাও উঠে গেছে। তা না হলে ব্যবসা করতাম। বিমানের এই সামান্য একটা চাকরি তে দুর্গাপূজা চালানো ভার হয়ে উঠবে। তাই মনে হয় পুজোটা বন্ধ হয়ে যাবে। এখন কথাটা কাউকে বলো না। পুজো আনন্দটা শেষ হয়ে যাবে। অন্তত শেষ বছরের মতো সকলে খুশিমনে পুজোটা কাটাক।' মা- 'বেশি চিন্তা করিস না। কিছু একটা নিশ্চয়ই হবে।' কোন কিছু স্বাভাবিক ভাবে ভাবতে পারছেনা সুরেন। কথাটা বলে মনটা হালকা হল। কলকাতা থেকে আসার সময় তিনটে খেলনা বন্দুক আর মুগীছাপ রিল এনেছিল। সেইগুলো সন্তু, যতীন আর অপর্নাকে দিয়ে বলল - 'এইগুলো তোদের পুজোর জন্য। প্রত্যেকদিন চারটা করে রিল বরাদ্দ। তার বেশি নেই।' আজ ঢাকায় এসে গেছে। তাদেরকে নাটমন্দিরের কাছে একটা ঘরে থাকতে দেওয়া হয়েছে। ঢাকিরা সামান্য কিছু টাকার জন্য আসে না। মুখার্জি বাড়ির সাথে আর পুজোর সাথে যুক্ত এক বাঁধন। মানুষকে পুজোর আমেজে বাজনার মাধ্যমে আনন্দ প্রদানের সম্পূর্ণ মানসিক সন্তুষ্টি। সেটাই বড়। পুজোর পর যখন তাদের জানানো হবে পুজো পরের বছর আর হবেনা, কি কষ্টই না তারা পাবে। ঢাকি সাথে তার ডাকে দশ বছরের ছেলে, মন্মথ সেও এসেছে। কাঁসর বাজায়। সন্তু যতীন আর অপর্ণা মন্মথকে খেলার সঙ্গী করে নিয়েছে। সন্তু মন্মথকে দুঃখ প্রকাশ করে বলল - 'তোর কি মজা, আমাদের মতো পড়াশোনা করতে হয় না। মাস্টারমশাইয়ের বকুনি খেতে হয় না আমাদের মত। সারাদিন খেলে বেড়াতে পারিস। 'মন্মথ -' সারাদিন খেলতে কারো ভালো লাগে নাকি? আমার কাছে বই নেই, তাই যেগুলো আছে ওগুলো পড়ি, যেগুলো নেই সেগুলো পড়ি না। আমার তো মাস্টার মশাই নেই। স্কুলের পরকে বোকবে আর? 'সন্তু -' চল্। খেলা শেষ করে নদীর ধার থেকে কাশফুল তুলে আনবো।' মন্মথ -' ঠিক আছে। কি করবি কাশফুল দিয়ে? 'অপর্ণা ও যতিন বলে ওঠে -' আমরা মন্দির সাজাবো। দু'ধারে রেখে। 'যতীন - 'নদীর ধারে একটা আশ্রম আছে। ওটার কাছে যাস না, একজন দাড়িওয়ালা থাকে। ঠিক ওই অসুরের মতো দেখতে। ও নিশ্চয় রাক্ষস। 'মন্মথ - ' ওতো সন্ন্যাসী। রাক্ষস হবে কেন? 'অপর্ণা - 'আমার ভয় করছে। আমি তোদের সাথে যাব না। আমি বাগানের ফুল দিয়ে সাজাবো।'যতীন - 'ফুল গাছ গুলোর পাশে কাটা গাছ। ওখানে যাস না। শুধু ফুল তুলিস। 'দেখতে দেখতে সপ্তমী চলে এল। বাড়িতে অতি আত্মীয়-স্বজনের সংখ্যা এখন বেশি। কেউ এসেছে গুপ্তিপাড়া থেকে কেউ আদিসপ্তগ্রাম, কেউবা ভাটপাড়া, ব্যারাকপুর। বিকেলবেলা সুরেন প্রতিমার কাছে, হঠাৎ এসে ডাকলো সুরেন - ' দাদা শিগগির আয় টিভিতে একটা খবর দেখাচ্ছে।' সুরেন আশ্চর্য হয়ে তাড়াতাড়ি গেল। একটা সংবাদ চ্যানেলে একটা বড় প্রকল্পের ঘুষনেওয়ার ব্যাপারে স্ট্রিং অপারেশন। বেশ কয়েকজনের নাম দেখাচ্ছে বারবার। কাত্যায়নী দেবী বলে উঠেন - ' ভালো হয়েছে, ঠাকুর যা করেন মঙ্গলের জন্য করেন। 'বিমান - 'আচ্ছা, তুই কি জানতিস এই ঘটনাটা। 'সুরেন - 'হ্যাঁ জানতাম। আর সেই জন্যই চাকরি ছেড়ে দিয়েছি' বিমান - 'হুঁ' বিস্ময়কর দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিল। সুরেন -'বিমান, এইবারই হয়ত আমাদের শেষ বারের পুজো। কি হবে জানিনা। পুজোর পর ভেবে দেখতে হবে। তবে ছেলেমেয়েগুলো পুজোর বেশ আনন্দে আছে। সেটা আখি হয়ে যাক এটা চাই না। 'আজ অষ্টমী সবাই ব্যস্ত। পুজো পুজোর মেজাজে সবাই আনন্দিত। কেউ কেউ চিন্তিত। দুর্গাপুজোর কত মহিমা। বাচ্চাদের খেলনা বন্দুক নিয়ে দুই দলের লড়াই খেলছে। অপর্ণার বন্দুকটা মন্দিরের পেছনে একটা গর্তে হাত ফসলে পড়ে যায়। একটা পাথরের বড় প্লেট গর্তটার অপর একটা একটা জায়গা জুড়ে রয়েছে। সন্তুকে বলায় সন্তু পাথরটা সরানোর চেষ্টা করল। পাথরটার ভার এতটাই যে তুলতে পারল না। অপর্ণা তখন ছুটে গিয়ে সুরেন আর বিমানকে ডেকে নিয়ে আসে। দুজনের চেষ্টায় অনেক কষ্টে পাথর টা সরিয়ে দেখা গেল কাঠের সিঁড়ি রয়েছে। অনেকটা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। পুজোর ব্যস্ততার মধ্যে এই রহস্য উদঘাটন করা যাবে না তাছাড়া সাপ থাকার সম্ভাবনা। তাই এখনকার মতো আবার পাথর চাপা দিল। খেলনা বন্দুকটি হাতের নাগালের মধ্যেই ছিল বলে উদ্ধার হয়ে গিয়েছিল। দুর্গাপুজো বেশ ভালভাবে কাটলো পুজো শেষ দুঃখ একটা রইল। ঢাকিরা এখনো আছে। আত্মীয়-স্বজন যে যারা বাড়ি ফিরে গেছেন। দিনের বেলা সুরেন আর বিমান এবার সুড়ঙ্গের রহস্য সমাধানে আবার পাথর সরালো। সুরঙ্গটাই একজন মানুষ কোনমতে গেলে যেতে পারে। কার্বলিক অ্যাসিড ছড়িয়ে টর্চ নিয়ে একটু নেমে সুরেন দেখতে পেল একটা ছোট্ট কুঠুরি। সুড়ঙ্গের আলো ছাড়া কোন জায়গায় আলো ছাড়া কোনো জায়গা দিয়ে আলো আসে না। অন্য পাশে একটা বড় শক্ত উপর মুখিদরজা সেটা তালা দিয়ে বন্ধ করা। এই দরজার ঠিক উপরে জায়গা তে ক্যাক্টাস গাছ লাগানো আছে। আর কিছু নুড়ি পাথর রাখা আছে। কুটির থেকে একটা ভারী কাঠের বাক্স পাওয়া গেল। আর চাদরের মোরা একটা খাতা। বাক্সটি তালা ভেঙ্গে খোলা হল। 'কি আশ্চর্য!' সবাই হতবাক দৃষ্টিতে দেখল - অনেকগুলো সোনার যৌবন ব্লগ আর একটা দূর্গা মূর্তি আঁকা কাগজ রয়েছে বাক্সতে। খাতার লেখা উদ্ধার করে দেখা গেল কোনো এক জমিদার পূর্বপুরুষ তার রোজনামতা লিখে রেখেছেন। বিশেষ চিন্তার কারণ গুলি খাতায় লেখা। ছেলে প্রচুর ব্যয়বহুল, বিলাসিতা স্বেচ্ছাচারী হাওয়ায় তার আশঙ্কা হয় দুর্গাপুজো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এইভাবে তার সম্পত্তির অংশ বাক্সবন্দি করে রাখেন। লুকিয়ে রাখেন। আগের মত অভিজাত্য না থাকলেও এতদিন পুজো হয়ে এসেছে। কাত্যায়নী দেবী আকাশের দিকে প্রণাম করে বললেন - 'ঠাকুর নিজের ব্যবস্থা নিজেই করলেন। আসছে বছর আবার হবে।'


-: বন্ধু :-
রেখা গড়াই
-------------

বন্ধু ছোট্ট একটা শব্দ
কিন্তু বড় গভীর এর অর্থ।
বন্ধু মানে ফুলের গন্ধে মিঠে দখিন হওয়া,
বন্ধু মানে আপন মনে গুনগুনিয়ে গাওয়া।

বন্ধু মানে সুখের সাথী, দুঃখের খেয়া তরী,
বন্ধু আছে বলেই মোরা বাজি ধরতে পারি।

বন্ধু মানে ছোট্ট বেলার কত খেলার সাথী,
বন্ধু মানে শীত দুপুরে মজার চড়ুইভাতি।

বন্ধু মানে দুপুর বেলায় আম-তেতুলের স্বাদ,
বন্ধু মানে মান- অভিমান, ঝগড়া- ঝাটি আর বাদানুবাদ।

বন্ধু মানে বর্ষাভেজা মেঠো কাদায় হরেক রকম খেলা,
বন্ধু মানে দলবেঁধে সব যাওয়া রথের মেলা।

বন্ধু মানে আগমনীতে শিউলি ফুলের ঝাঁক,
বন্ধু মানে হৈ- হুললোর, মনে জয়ের ঢাক।

বন্ধু মানে পূজোর ভোরে ফুলের খোঁজে যাওয়া,
বন্ধু মানে মায়ের পায়ে এক সাথে অঞ্জলি দেওয়া।

বন্ধু মানে ফাগুন হওয়া, বন্ধু নতুন দিগন্ত,
বন্ধু থেকো তুমি মনের গহীনে হয়ে চিরবসন্ত।



-: আমি সেই মেয়ে :-
রিয়া খাণ্ডাইত
-----------------------

আমি সেই মেয়ে।
যে হাসলে বলে,
তুমি মেয়ে বড্ড ফাজিল।
আবার কাঁদলে বলে
তুমি মেয়ে বড্ড ছিঁচ কাঁদুনি।

আমি সেই মেয়ে।
যে নীরব হলে বলে
তুমি মেয়ে খুব চুপচাপ থাকো
কথা বলতে পারো না?
আবার গল্পপ্রিয় হলে বলে
তুমি মেয়ে খুব কথা বলো
চুপচাপ থাকতে পারো না?

আমি সেই মেয়ে।
যে প্রতিবাদ না করলে বলে
তুমি মেয়ে বড়ই দুর্বল।
আমার প্রতিবাদ করলে বলে
তুমি মেয়ে বড়ই বেয়াদব।

আমি সেই মেয়ে।
যে বেশি পাত্তা দিলে বলে
তুমি মেয়ে বড্ড বাচাল।
আবার বেশি পাত্তা না দিলে বলে
তুমি মেয়ে বড্ড অহংকারী। 

-: টালির ছাদের কাশফুলে :-
অঙ্কিতা ঘোষ
-----------------------

আকাশের কাশফুলগুলো বেশ ঘন হয়ে ফুটেছে। হাওয়ার দোলায় ওদের আরো সুন্দর দেখায়। ছোটবেলায় পুজোর সময় মায়ের কোলে চেপে জুঁইফুল দেখতে দেখতে তো ভাত খেত অহনা। সেকি সুখের দিন ছিল সেই ছোটবেলাটা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আজ অনেক কিছুই বলেছে, অনেক কিছুই একা হয়েছে। মায়ের কোলে চেপে ভাই বাবা-মা সবার সাথে একসঙ্গে মিলে বাজার করা সবটাই কেমন যেন খুব তাড়াতাড়ি বদলে গেল। আজ বোধহয় অষ্টমী ঠিক মনে করতে পারে না অহনা। ওই নিজের নাম যে 'অহনা' এটাই আস্তে আস্তে উঠে বসেছে মেয়েটা এখানে ওকে সবাই চুটকি বলেই জানে। নাম জানতে আর কেই বা আছে এখানে। দুটো মিষ্টি কথা, তারপর এইসব ঝঁপিয়ে পরে। নিষিদ্ধ পল্লীর টালির ঘর গুলো বোধ হয় এক রকমই। যারাই সময় কটা কাটাতে আছে তারাই কাজ হয়ে গেলে পয়সা দিয়ে তৃপ্তি মুখে বেরিয়ে চলে যায়। কেউ ফিরেও তাকায় না। প্রায় এক বছর আগে এরকমই একটা অষ্টমীর দিনে কথা মনে পড়ে যায় অহনার - সেই দিনই তো প্রথম ওরা জানতে পারে ওর ভাই ভাইয়ের কিডনি ব্যমোটার কথা। শুনেছিলাম নাকি প্রায় লাখখানেক টাকা দরকার ওর ভাইকে বাঁচিয়ে তুলতে। অষ্টমীর অঞ্জলি ভীষণভাবে মায়ের কাছে ওর ভাইয়ের নিয়ে প্রার্থনা করেছিল অহনা। বাড়ি ফিরে দেখে রতন কাকা ওর বাবার সাথে কি সব আলোচনা করছে। রতন কাকাকে কখনোই পছন্দ হয় না অহনার। কেমন লোভের দৃষ্টিতে তাকায় যেন লোকটা তার দিকে। সেদিন রাত্রিবেলায় খেতে বসে বাবা বললেন রতন কাকা নাকি অহনাকে কোথায় একটা ভালো জায়গায় কাজ দিয়ে দেবেন যাতে কিছু টাকা আসে সাথে নাকি ভালো কোন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবে শহরে। বিশ্বাস হয়নি অহনার, মাকে অনেক করে বলেছিল যে রতন কাকা মিথ্যে বলছে। কিন্তু ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আর বেশি কিছু বলতে পারেনা অহনা। দশমীর দিন সকাল আটটায় ট্রেন নতুন শহরে গ্রামের মেয়ে। দিনযাপন তাও আবার বাবা মাকে ছেড়ে ভাবতেই পারেনা অহনা। কিন্তু তাও ভাইকে সুস্থ করতে হবে এই ভাবনাটাই অহনাকে অসার করে দিচ্ছিল। সেদিন ট্রেন থেকে কোন এক অচেনা জায়গায় নামিয়ে এই টালির ঘরগুলোয় ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলো অহনাকে। তখন থেকে এখানেই বাস। বাবা মা কোথায়? ভাইটা আদৌ ঠিক আছে কিনা কিছু জানে না মেয়েটা। কাশফুলের দিকে একমনে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যেন ভুলেই গেছে ওর ধান্দার সময় হয়ে এসেছে। পুজোর সময়টায় ফির একটু বেশি থাকে ওদের ব্যবসায়। আজকের এই একটা বছর পরের অষ্টমী তা অনেকটাই আলাদা। অঞ্জলি দিয়ে পাপ ধুয়ে শহর ছুটবে শরীর ছুঁতে সম্ভবত বিলাসিতায় স্বপ্নগুলো ভাসিয়ে দিতে। হয়তো কিছু স্বপ্ন এভাবে ভেঙ্গে যায় হয়তো কিছু প্রার্থনা এভাবেই না সোনা হয়ে থেকে যায়।


যে কোনও সাধারণ ওয়েবসাইট তৈরি করতে এবং যে কোনও ধরণের বিজ্ঞাপনের জন্য এই নম্বরে যোগাযোগ করুন। ✩ যোগাযোগ - ৯০৬৪৯২৪০৬০ ✩ ইমেল - snbspnd@gmail.com